দেশ ও দেশের বাহিরের সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন- মোঃ সবুজ মাহমুদ
জনজীবন:::///
দেশ ও দেশের বাহিরের সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী চালক দল মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ সবুজ মাহমুদ সরকার।
পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীর উৎসবের আরেক নাম। পুরোনো বছরের বিবাদ, সংঘাত পিছনে ফেলে নতুন বছরের আনন্দে মেতে উঠে বাঙালীরা। বলা চলে, পৃথিবীতে খুব কম জাতিরই নিজস্ব নববর্ষ আছে। তাদের মধ্যে ভাগ্যতম তালিকার মধ্যে বাঙ্গালীও অন্যতম। বাঙালিরা সেই ঐতিহ্যবাহী গর্বিত জাতি যাদের নিজস্ব নববর্ষ, নিজস্ব ভাষা, নিজস্ব শক্তিশালী বর্ণমালা, নিজস্ব ষড়ঋতু, নিজস্ব উঁচুমানের সংস্কৃতি রয়েছে- এবং সারা বিশ্বে একমাত্র বাঙালিরাই তাদের নিজস্ব ষড়ঋতুকে আলাদা আলাদা করে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেয়।
বাংলাদেশ তথা বাংলা ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও ছয় ঋতু নেই- এটাই বাঙালির গর্ব করার মত বিচিত্র বৈশিষ্ট্য। অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক উৎসবে এবং অপার আনন্দের সাথে বাঙালি এর মধ্যে খুঁজে পেয়েছে তার প্রকৃত পরিচয়। পহেলা বৈশাখ শুধু একটি উৎসব নয়, বরং এটি বাঙালি জাতির ঐক্য, সংস্কৃতির আভিজাত্যের প্রতীক।
বাংলাদেশের মানুষ উৎসব প্রিয়। নানান রকমের উৎসব আমাদের জাতীয় জীবনে জড়িয়ে আছে। ঠিক তেমনি বাংলা নববর্ষ আমাদের আর্থ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের দাবীদার। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিরা নববর্ষ উদযাপন করে আসছে। বৈদিক যুগে ‘চৈত্র সংক্রান্তি’ নামে এই উৎসব পালিত হত।

মধ্যযুগে ‘পয়লা বৈশাখ’ বা ‘নববর্ষ’ নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন ‘হালখাতা’ নামে ব্যবসায়ীরা নতুন খাতা খুলে নতুন হিসাব শুরু করতেন। মুঘল সম্রাট আকবর ১৫৫৬ সালে ‘বঙ্গাব্দ’ নামে নতুন বর্ষপঞ্জি প্রবর্তন করেন। তখন থেকেই ‘পহেলা বৈশাখ’ রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপিত হতে থাকে।
বাঙালির এই উৎসবে অসাম্প্রদায়িক বিষয়টি সবচেয়ে আলোকিত হয়ে ফুটে ওঠে। বাঙালির মধ্যে নতুন করে প্রাণ-সঞ্চারিত হয়। বেশ কিছু নতুন বিষয় সংযুক্ত হয় পহেলা বৈশাখকে ঘিরে। সাহিত্যেও প্রভাব রয়েছে বৈশাখের রুদ্ররূপ ও বিভিন্ন উৎসব নিয়ে। রবীন্দ্রনাথ-নজরুল থেকে শুরু করে হালের কবি-সাহিত্যিকগণ বৈশাখ নিয়ে কবিতা-সাহিত্য রচনা করছেন। বাঙালি ‘হালখাতা’ নামে ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন করে হিসাব শুরু করে। বাংলা নববর্ষে বেচাকেনায় ছাড় দেওয়ার সংস্কৃতি আছে। বাঙালির এ উৎসব অসাধারণ বৈশিষ্ট্যময়। বাংলা নববর্ষের এই ঐতিহ্য মাটি ও মানুষের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এখানে কোনো জাতিভেদ ও ধর্মভেদ নেই। শহর-গ্রামে তরুণ-তরুণীসহ সবাই উৎসবে মেতে ওঠেন। পাশাপাশি প্রবাসেও এই উৎসব উদযাপনে বাঙালিদের মাঝে প্রানের সঞ্চার করে। সূর্য উঠার সাথে সাথে রবীন্দ্রনাথের গানটি ‘এসো হে বৈশাখ ‘গেয়ে ওঠে নূতন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় নজরুল বলেছেন, ধ্বংস আর যুদ্ধ থেকেই নতুনের সৃষ্টি হয়! তেমনই বাংলা নববর্ষের কালবৈশাখী ঝড় বা রুদ্র রূপ থেকেই অনুপ্রেরণা পায় বাঙালি।